ভর্তি সংক্রান্ত

ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজকের এই আর্টিকেলটিতে থাকছে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়াকে ভর্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করা হয়। এটা একেবারেই অযৌক্তিক নয় কিন্তু!

কারণ ভর্তি পরীক্ষার সময় দেখা যায় লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে, তাদের মধ্যে থেকে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে থাকে। ভর্তি পরীক্ষায় আপনাকে এগিয়ে থাকতে হলে অবশ্যই কিছু কৌশল অনুসরণ করতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

এই পরীক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাত্র এক-দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা ফলাফল একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নির্ধারণ করে দেয়।

একজন সচেতন ভর্তিযুদ্ধ হিসেবে আপনাকে অনেক বেশি বিচক্ষণতার সাথে প্রতিটা পদক্ষেপ পার করতে হবে। পরীক্ষার এক-দেড় ঘণ্টার সময়টা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে খুব সহজে ভর্তি পরীক্ষার একটা আসন সুনিশ্চিত করা সম্ভব।

এখন জেনে নেওয়া যাক, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার উপায়। নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করলে আশা করি পরীক্ষার হলে ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন এবং অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন।

ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার সেরা ৯টি টিপস

১. ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মমাফিক পড়াশোনা করতে হবে। শুধু নতুন পড়ার পিছনে না ছুটে নিয়মিত পুরনো পড়া রিভিশন দিয়ে ঝালাই করে নিতে হবে। এজন্য আপনাকে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার অন্যতম সেরা ও কার্যকরী উপায় ; নিয়মিত অনুশীলন করা। ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করতে চাইলে অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই।

২. ভর্তি পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন ভর্তিযোদ্ধার নিয়মিত মডেল টেস্ট দেওয়া উচিত। এই পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে যাচাই করে নিজের অবস্থান সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারবে। কোন কোন বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো এই মডেল টেস্টের মাধ্যমে ধরা পড়বে। দুর্বল বিষয়গুলো ভালভাবে আয়ত্ত করতে হবে। এছাড়া সময় জ্ঞান সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা হবে। কারণ পরীক্ষায় হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

৩. বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার  প্রশ্ন বুঝে শুনে উত্তর করা উচিত। নতুবা তাড়াহুড়া করে ভুল উত্তর দাগানোর ফলে আপনাকে আফসোস করতে হবে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সহিত প্রতিটি প্রশ্ন করে তারপরে উত্তর করা উচিত। কোনমতেই প্রথমেই উত্তর পাওয়া মাত্র দাগানো উচিত না। সবগুলো অপশন দেখে এবং পুরো প্রশ্নটিই ভালোভাবে বুঝে তারপরে কাঙ্খিত উত্তরটি দাগানো উচিত। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সবগুলো অপশন যদি আপনার কাছে অজানা মনে হয়, তবে কোনমতেই সেসব দাগানো ঠিক নয়। যদি চারটি অপশন এর মধ্যে দুটি অপশন আপনার কাছে কনফিউস হয়, তাহলে এ ধরনের প্রশ্নগুলো অবশ্যই দাগানো উচিত।

 

৪. পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দাগানোর সময় খেয়াল রাখা উচিত কত নম্বর প্রশ্ন উত্তর করতেছেন। কারণ অনেক সময় এরকম হয়, আপনি উত্তর করবেন ১২ এর খ কিন্তু ভুলবশত দাগিয়ে ফেলেছেন ১৩/১১ নম্বরের খ। এজন্য খুব বেশি মনোযোগ দিয়ে প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দাগানো উচিত।

 

৫. পরীক্ষার আগের দিন খুব বেশি রাত জেগে পড়াশোনা করা উচিত নয়। কারণ এই রাতে খুব বেশি পড়াশোনা করা সম্ভব নয়। কারণ এটা ২-১ দিনের কাজ নয়, এটা ১-২ বছরের কাজ। প্যারা না নিয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া উচিত।  তবে ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র  ফাইলে তুলে নেওয়া উচিত।

 

৬. পরীক্ষার দিন যতটা সম্ভব খুব সকালে ঘুম থেকে উঠা উচিত। পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় হাতে নিয়ে পরীক্ষার হলে রওনা হওয়া উচিত। কারণ বিপদের কথা বলা যায় না। পরীক্ষা শুরু হওয়ার দু-এক ঘন্টা আগেই পরীক্ষার হলে পৌঁছানো উচিত, যাতে নিজেকে সেখানে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায়। পরীক্ষার হলে দেরিতে প্রবেশ করলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবে। যেমন, বুক ধড়ফড়ানিতে নিজের রোল  লিখতেও ভুল করতে পারো। অনেক বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়বে। এজন্য পূর্ব সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।

 

৭. পরীক্ষার হলে নিজের উত্তরপত্রে অবশ্যই প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী ( যেমন: রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রভৃতি ) সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। নতুবা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পাবে না। নিজের নাম ও পিতা মাতার নাম সঠিকভাবে পূরণ করতে হয়। বৃত্ত সুন্দরভাবে বল পয়েন্ট কলম দিয়ে ভরাট করতে হবে। ঘষামাজা করা যাবে না।

 

৮. প্রশ্ন পাওয়ার সাথে সাথে সবগুলো প্রশ্নের পেজ দেখে নেবে ঠিক আছে কিনা। যে প্রশ্নগুলো আপনার কাছে সহজ মনে হবে সেগুলো আগে উত্তর করা উচিত। প্রথমে নিশ্চিত জানা উত্তরগুলো আগে দাগাতে হবে। এরপর কনফিউজড প্রশ্নগুলো ভেবেচিন্তে দাগানো উচিত।

 

৯. সর্বশেষ নিজের সম্পর্কে উত্তরপত্রে যেসব তথ্যাবলী ভরাট করেছ সেগুলো একবার দেখে নাও। কারণ এগুলো ঠিক না হলে পরীক্ষা দেওয়ার কোন মানে হবে না।

 

উপসংহার

আশা করি, উপরে উল্লেখিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার সেরা ৯টি টিপস যে কেউ অনুসরণ করলে ভর্তি পরীক্ষা ভালো ফলাফল করবে এবং অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে।

উপরের টিপসগুলো একজন ভর্তিযোদ্ধাকে ভালোভাবে একটা ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি।

আশা করি আজকের এই লেখা, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়’ আপনার ভালো লেগেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button