তথ্যমূলক

দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায় [সেরা ৮টি উপায়সহ টিপস]

অনলাইন থেকে ইনকাম করার অন্যতম সেরা একটি উপায় হচ্ছে ব্লগিং করে ইনকাম করা । একমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইট দিয়ে আপনি চাইলে প্রতিমাসে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।

ব্লগিং করতে চাইলে অবশ্যই আপনার মাথায় যে কথা প্রথম আসবে সেটা হলো গুগল এডসেন্স।

গুগল এডসেন্স ছাড়া ব্লগিং করার চিন্তা কারো মাথায় আসে না। তবে বিষয়টি একেবারে সেইরকম নয়। ব্লগিং করে ইনকাম করার অন্যতম সেরা সহজ ও নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে গুগল এডসেন্স।

আপনি চাইলে গুগল এডসেন্স এর বিকল্প হিসেবে অন্যান্য এড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আয় করতে পারেন। তবে আমি আপনাকে পরামর্শ দেবো গুগল এডসেন্স ব্যবহার করার ।

একমাত্র গুগল এডসেন্স পৃথিবীতে নির্ভরযোগ্য ও পেমেন্ট করে এমন  একটা এড নেটওয়ার্ক। গুগল এডসেন্স মূলত গুগলের একটা জনপ্রিয় প্রোডাক্ট যেটি সবার কাছে বিশ্বাস যোগ্য।

গুগল এডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায় ]

ইউটিউবারদের মত একজন ব্লগার নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করে মনিটাইজ পাওয়ার জন্য। যদিও ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।

ব্লগ ওয়েবসাইট মূলত আর্টিকেল কনটেন্ট নিয়ে এবং আর ইউটিউব  মূলত ভিডিও কনটেন্ট নিয়ে কাজ করে।

তবে উল্লেখ্য ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে কাজ করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ধরনের খরচ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। অন্যদিকে একটা ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে একটা নির্দিষ্ট খরচ ছাড়া তেমন কোনো খরচ করতে হয় না।

আজকে আমরা মূলত আলোচনা করব দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায় নিয়ে।

 

গুগল এডসেন্স পাওয়ার সেরা ৮টি উপায়

বর্তমানে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রূভাল করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। তাই বিষয়টিকে আমরা হালকা ভাবে নিতে পারবো না। গুগল এডসেন্স সহজে পেতে চাইলে আপনাকে তাদের কিছু নিয়ম নীতি অনুসরণ করে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে।

তাদের নিয়ম নীতি অনুসরণ না করার ফলে বর্তমানে আমাদের ব্লগ ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা যদি গুগল প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি অনুসরণ করে ব্লগ সাইট তৈরি করে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করি, তাহলে অবশ্যই অনুমোদন পেয়ে যাবো।

তো চলুন জেনে নেওয়া যাক , দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায় এবং কিছু টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কে :

 

১. টপ লেভেল ডোমেইন

গুগল এডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায়ের মধ্যে এটি একটা। আপনি যদি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে খুব দ্রুত গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে এটি করতে হবে।

একটা সময়ে ফ্রি ডোমেইন ব্যবহার করে গুগল এডসেন্স পাওয়া যেতো। বর্তমানে গুগল এডসেন্স ফ্রি ডোমেইন ব্যবহার করে অনুমোদন পাওয়া অনেক বেশী কষ্টকর।

আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ব্লগার হতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে একটা টপ লেভেল ডোমেইন কিনে ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করতে হবে।

কারন একটা সময়ে আপনার ফ্রি ডোমেনগুলো ব্যবহার করতে ভাল লাগবেনা। তখন ঠিকই আপনাকে একটা টপ-লেভেল ডোমেইন কিনতে হবে।

বিগিনার অবস্থায় আপনি তাহলে গুগলের blogspot. com ব্যবহার করে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

এটা বিনামূল্যে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন এবং কোন ধরনের হোস্টিং কেনার প্রয়োজন পড়বে না।

একটা টপ লেভেল ডোমেইন কিনলে গুগল এডসেন্স পাওয়া যেমন সহজ হবে তেমনি এসইও করার সময় অনেক সুবিধা পাবেন।

টপ লেভেল ডোমেইন গুলোতে এরকম হয়ে থাকে .com .net .info .live .co ও .news প্রভৃতি। আমি আপনাকে সুপারিশ করব প্রথমাবস্থায় একটা টপ লেভেল ডোমেইন কিনে ব্লগিং শুরু করার জন্য।

 

২. গুরুত্বপূর্ণ পেজসমূহ যোগ করা

ব্লগে দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ উপায় এটি।

আপনি যদি গুগল এডসেন্স পেতে চান তবে অবশ্যই তাদের শর্ত মোতাবেক আপনার ওয়েবসাইটে কিছু পেজ থাকা আবশ্যক। খুব সহজে ব্লগ ওয়েবসাইটে নিচে গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলি তৈরি করে নেবেন।

গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলি হলো : 

  • About Us
  • Contact Us
  • Privacy and policy
  • Terms and conditions
  • Disclaimer

আপনি চাইলে ফ্রিতে অনলাইনে থাকা বিভিন্ন জেনারেটর ওয়েবসাইট দিয়ে এই পেইজ গুলো তৈরি করে নিতে পারবেন।

 

৩. কপিরাইটমুক্ত ইউনিক পোস্ট লেখা

দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়গুলোর মূল মন্ত্র হলো হলো কপিরাইটমুক্ত ইউনিক পোস্ট লেখা। বিগিনার অবস্থায় অধিকাংশ ব্লগারগণ এই ভুলটি করে থাকে যে তারা অন্যের লেখা কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে।

আপনি কোন কপি আর্টিকেল লিখতে গেলে সেটা আপনার জন্য কোন কাজের হবে না।

কপি করা আর্টিকেল সার্চ ইঞ্জিনে রেংকিং করবে না। কপিরাইটযুক্ত আর্টিকেল পাঠকগণ পড়তে উৎসাহিত হন না।

গুগল এডসেন্স পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ইউনিক ও কপিরাইটমুক্ত আর্টিকেল লিখতে হবে। নতুবা আপনি গুগল এডসেন্সের মুখ দেখতে পাবেন না।

অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের টুলস ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনার আর্টিকেল এর কপিরাইট চেক করতে পারবেন।

আপনাকে অবশ্যই কপিরাইটমুক্ত আর্টিকেল লিখে সেটা পাবলিশ করতে হবে।

কপিরাইটমুক্ত ইউনিক আর্টিকেল লেখার পাশাপাশি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার কনটেন্ট যেন গুগল এডসেন্স পলিসি মোতাবেক লেখা হয়। এজন্য অবশ্যই তাদের পলিসি পড়ে নিবেন।

 

৪. বড় আর্টিকেল লেখা

গুগল এডসেন্স পাওয়ার অন্যতম সেরা সহজ উপায় হলো হাই কোয়ালিটি ইউনিক আর্টিকেল লেখা।

যারা আর্টিকেল লিখতে পছন্দ করেন না তারা দয়া করে ব্লগিং সেক্টরে আসবেন না। আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখবেন সেটা অবশ্যই ইউনিক তথ্যবহুল হতে হবে।

পাঠকরা পড়ে যেন তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে পারে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে পূরণ না হলে সেটি কখনো ভ্যালুয়েবল আর্টিকেল হবে না।

আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেল লিখতে হবে ৩৫০ শব্দ থেকে ২০০০ শব্দের মধ্যে। আপনি অযথা ছোট ছোট আর্টিকেল পাবলিশ করলে সেগুলো লো  ভ্যালু কনটেন্ট সমস্যা প্রবলেম দেখায়।

যার কারণে আপনি কখনই গুগল এডসেন্স অনুমোদন করতে পারবেন না। সুতরাং খুব সহজে গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে তথ্যবহুল ও ইউনিক আর্টিকেল লেখার চেষ্টা চালাতে হবে।

 

৫. পর্যাপ্ত আর্টিকেল থাকা

অনেকে আছেন যে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে ওয়েবসাইট ডিজাইন করে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করে। যার কারণে তাকে ব্যর্থ হতে হয় প্রথমে।

আপনি যদি প্রথম অবস্থায় এমনটা করেন তবে কখনোই আপনি গুগল অ্যাডসেন্স পাবেন না। আমার অনেক বন্ধু বান্ধবী আছে যারা প্রথম অবস্থায় এমনটাই করেছিল।

আপনার ওয়েবসাইটে অবশ্যই যথেষ্ট পরিমান আর্টিকেল থাকতে হবে। নতুবা আবেদন করলে নো কনটেন্ট সমস্যা দেখাবে। গুগল কর্তৃক মিনিমাম আর্টিকেল প্রকাশ করার কোন লিমিট নেই।

তবে আমি আপনাকে সুপারিশ করব প্রথম অবস্থায় ১৫ থেকে ২৫ টি আর্টিকেল পাবলিশ করে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন।

 

৬. কপিরাইটযুক্ত ইমেজ ব্যবহার না করা

ওয়েবসাইটে আর্টিকেল প্রবেশ করার সময় প্রতিটা আর্টিকেলে সর্বনিম্ন একটা ইমেজ ব্যবহার করতে হয়। আপনি ইমেজ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।

আপনি গুগল থেকে সরাসরি কোন ইমেজ ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কোন ওয়েবসাইট এর নাম লেখা আছে এমন কোন ইমেজ ব্যবহার করতে পারবেন না।

আপনাকে অবশ্যই ইমেজ ও কপিরাইটমুক্ত ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। আপনি গুগল থেকে ডাউনলোড করা ইমেইল ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই সুন্দর করে এডিট করে নিজের ওয়েবসাইটে নাম ব্যবহার করতে হয়।

গুগল থেকে ডাউনলোড করা ইমেজ এডিট করে কাস্টমাইজ করে নিতে হবে।

আপনার ইমেজ যদি কপিরাইটযুক্ত হয় তবে গুগল এডসেন্স কখনোই পাবেন না। সুতরাং কপিরাইটযুক্ত ইমেজ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

 

৭. অন্য এড নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা

গুগল এডসেন্স না পাওয়ার অন্যতম কারণ হয় কখনো কখনো এটি। আপনি যদি কোনো ব্লগ সাইটে গুগল এডসেন্স পেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

গুগল এডসেন্স এর বিকল্প হিসেবে অনেকে বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় যেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। এগুলো ব্যবহার করে আবেদন করলে কখনোই গুগল এডসেন্স অনুমোদন পাবেন না।

সুতরাং আপনি যদি কোনো অ্যাড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকেন তবে অবশ্যই সেখান থেকে ডিসকানেক্ট করে দিবেন।

গুগল এডসেন্স অনুমোদন পাওয়ার পূর্বে ভুলেও থার্ড পার্টির কোনো বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবেন না।

গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেলে আপনি চাইলে গুগলের শর্ত মোতাবেক third-party বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে পারেন।

 

৮. ওয়েবসাইট ডিজাইন ও এসইও

দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে সর্বশেষ উপায় হলো এটি।  গুগল এডসেন্স পাওয়ার জন্য ওয়েবসাইট ডিজাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন অবশ্যই সহজ সাধারণ করতে হবে। আপনি অবশ্যই একটি এসইও ফ্রেন্ডলি রেস্পন্সিভ টেমপ্লেট ব্যবহার করবেন।

এটা আপনার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধি করে দিবে। ওয়েবসাইট ডিজাইন করার পাশাপাশি আপনার অনপেজ এসইও করে নিতে হবে।

তাহলে খুব সহজে গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেয়ে যাবেন।

 

আমাদের কথা

আজকের আর্টিকেল এর মূল বিষয় ছিল গুগল এডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায়। আশা করছি পুরো আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করে কাজ করলে আশা করি খুব দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button