পড়াশোনা

শূন্য থেকে বিসিএস প্রস্তুতি | বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করার উপায় | বিসিএসে ভালো করার উপায়

বিসিএস এমন একটা জিনিস যেটা আপনাকে সম্মান, ক্ষমতা ও অর্থ সবকিছু দিতে পারে। বিসিএস চাকরিজীবীদের আসলে বিয়ের জন্য কোন মেয়ের অভাব হয় না। অদ্ভুত মনে হলেও কথাটি চির সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আজ সমাজে। বিসিএস মানেই সোনার হরিণ।

বিসিএস এর চাহিদা দিন দিন আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। এ চাকরির চাহিদা বাড়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য কারণ হলো বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সরকারি চাকরি।

আর আমরা সবাই জানি সরকারি চাকরি হওয়া যেমন কঠিন তেমনি চলে যাওয়াও কঠিন। অনেক তো বকবক করলাম, এখন ফিরে আসি মূল লেখায়। আজকের লেখাটি মূলত বিসিএসে ভালো করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার উপায়

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা কি আদৌ কঠিন! হ্যাঁ, সেটাই আপনাকে বলছি, বিসিএস প্রিলিমিনারীতে পাস করা আসলে খুব বেশি কঠিন নয় আবার খুব বেশি সহজ নয়।

বিসিএস প্রস্তুতি যদি সঠিক গাইডলাইন অনুসারে নেওয়া হয় তাহলে খুব সহজে পাশ করার সম্ভব। একটা সঠিক প্রস্তুতি আপনাকে লক্ষ লক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্য থেকে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিসিএস প্রস্তুতি সঠিকভাবে নিলে এবং পাশাপাশি কিছু স্ট্যাটিজিক কৌশল অবলম্বন করলে খুব সহজে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা সম্ভব। কি কি টেকনিক অবলম্বন করলে বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেন আজকের এই লেখায়।

বিসিএস পরীক্ষায় মূলত দুই ধরনের পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে থাকে।

পরীক্ষার্থীর ধরন ১ : এমন বিসিএস পরীক্ষার্থীরা হলেন প্রথমবারে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীরা। এরা হলেন নতুন পরীক্ষার্থী।

পরীক্ষার্থীর ধরন ২ : আরেক ধরনের পরীক্ষার্থী হলেন পুরাতন বিসিএস পরীক্ষার্থী। এরা পূর্বেও অনেকবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে। এমনও হতে পারে তারা বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন ক্যাডারে নিযুক্ত আছেন।

কেউ পছন্দের ক্যাডার পাওয়ার জন্য বারবার পরীক্ষা দিচ্ছেন আবার কেউ কেউ ব্যর্থ হয়ে বারবার বিসিএস পরীক্ষা দিচ্ছেন। এধরনের পরীক্ষার্থীর পূর্ব অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও প্রস্তুতি অনেক বেশী হয়ে থাকে।

এবার আসি একদম নতুন শিক্ষার্থীদের কথায়। যারা প্রথম বিসিএস হিসেবে ৪৫ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছেন। অনেকে হয়তো কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। পরিকল্পনামাফিক গোছানো গুনাহ প্রস্তুতি নিলে প্রথম বিসিএসে ক্যাডার হওয়া সম্ভব।

আজকের এই পোষ্ট পড়লে বিসিএস ইংরেজিতে ভালো করার উপায় জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার উপায়। আরো টেকনিক থাকবে বিসিএস রিটেন ভালো করার উপায়। বিসিএস গণিতে ভালো করার উপায়। বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করার উপায়।

বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করার সেরা কিছু কৌশল

বিসিএস প্রস্তুতি কৌশল ১

বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়ার পূর্বে প্রথমে আপনাকে বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এরপর আপনাকে বিসিএস পরীক্ষার বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়ে সম্যক ধারণা নিতে হবে প্রশ্ন প্যাটার্ন সম্পর্কে। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়লে যে কোন চাকরি পরীক্ষায় কাজে দিবে।

আপনাকে কমপক্ষে বিগত বছরের ৩৫-৪৪ তম বিসিএস এর সবগুলো প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ সমাধান করতে হবে। এগুলো আপনি চাইলে যেকোন একটা প্রশ্নব্যাংক কিনে সমাধান করতে পারেন কিংবা হাতের কাছে জব সলুশন নামক বইটি থাকলে সেখান থেকে সমাধান করে নিতে পারেন।

বিসিএস প্রস্তুতি কৌশল ২

বিসিএস প্রিলিমিনারীতে ভালো করার জন্য আপনাকে ‘বিসিএস প্রিলিমিনারি অ্যানালাইসিস’ বইটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত টানা মুখস্ত রাখতে হবে। আমি আপনাকে বলছি না এই বই পড়লে আপনি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করে যাবেন।

তবে হ্যাঁ এই বইটি সম্পূর্ণ শেষ করতে পারবে আপনার আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে আপনার মধ্যে যে ভয় কাজ করছিল তা একদম দূর হয়ে যাবে।

বিসিএস প্রস্তুতি কৌশল ৩

এখন আপনি চাইলে যে কোন প্রকাশনীর একটি বই উদাহরণস্বরূপ (এমপিথ্রি/প্রফেসর’স/অ্যাসিওরেন্স/ওরাকল) বাজার থেকে সংগ্রহ করে বিষয়ভিত্তিক টপিকগুলো পড়ে সম্পন্ন করতে পারেন। প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে আপনাকে জানতে হবে কোন টপিকগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

পড়ার সময় বেশি গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো বা অধ্যায়গুলো ভালোভাবে পড়ে সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি আপনাকে নবম-দশম শ্রেণীর ‘ভূগোল ও পরিবেশ’ বইটি ভালোভাবে পড়ে শেষ করতে হবে। বিগত বছরে বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রশ্ন অনেক কমন এসেছিল। এই বই থেকে মূলত প্রশ্ন হয় ‘ভূগোল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’ অংশে।

বিসিএস প্রস্তুতি কৌশল ৪

প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বিগত বছরের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন হুবহু কমন পড়ে। তাই আপনাকে বাজার থেকে যেকোন একটা প্রকাশনীর জব সলুশন কিনে তা ভালোভাবে শেষ করতে হবে। আপনি চাইলে ওরাকল কিংবা প্রফেসর্স এর যে কোন একটা জব সলুশন কিনে দেখতে পারেন।

বিসিএস প্রস্তুতি কৌশল ৫

বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করার একটি কৌশল হলো নিয়মিত মডেল টেস্ট দেওয়া। বাজার থেকে ভালো একটা প্রকাশনীর মানসম্মত মডেল টেস্ট বই কিনে নিয়মিত সেই মডেল টেস্টগুলো পরীক্ষা দিতে পারেন। নিয়মিত মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিলে নিজের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনি কোন বিষয়ের কোন টপিকে খারাপ করছেন মডেল টেস্ট পরীক্ষায় সেগুলো শনাক্ত করে আরো ভালোভাবে সেই টপিকগুলো সম্পন্ন করুন। যদি নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে বারবার আপনি খারাপ করেন তবে আপনাকে সে বিষয়ে আরো জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে।

বিসিএসে ভালো করার কিছু সেরা টিপস

  • আপনাকে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শ্রেণীর সকল গণিত বইগুলো ভালোভাবে পড়ে সম্পন্ন করতে হবে। বিশেষ করে আপনাকে চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণীর গণিত বই ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।
  • নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ বইটি ভালোভাবে পড়তে হবে।
  • প্রতিদিন কমপক্ষে একটি জাতীয় পত্রিকা পড়তে হবে। অথবা আপনি চাইলে যেকোনো একটা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বই কিনে পড়তে পারেন। বাজারে বিভিন্ন ধরনের সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান নিয়ে রচিত বই রয়েছে। বিসিএস পরীক্ষায় আগ মুহূর্তের সাম্প্রতিক কিছু সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষায় বেশি থাকে।

 

এবার আসি পরীক্ষার্থীর ধরন ২ অনুযায়ী বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি কেমন হবে সেটা সম্পর্কে কিছু টিপস। আমরা সবাই জানি যে, বিসিএস পরীক্ষা সাধারণত বহুনির্বাচনী প্রশ্ন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে বহু নির্বাচনী পরীক্ষার নম্বর বিসিএস পরীক্ষায় মোট নম্বর এর সাথে যোগ করা হয় না। এখানে আপনি যদি ১২০ নম্বর পান তবে আপনার জন্য যথেষ্ট।

যাদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত ভালো একটা মডেল টেস্ট বই কিনে মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া উচিত। সাধারণত দেখা যায় বিসিএস পরীক্ষায় প্রতিযোগীর সংখ্যা অনেক বেশী হয়ে থাকে।

এই তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে টিকে থাকার জন্য শুধু টেকনিক অবলম্বন করলে হবে না। আপনাকে আপনার বেসিক জ্ঞান বাড়াতে হবে। আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে এবং সেইসঙ্গে আরো বেশি কৌশলী হতে হবে।

তাই আর অবহেলা না করে নিজের সময়টাকে কাজে লাগান। কারণ ভালোভাবে পরিশ্রম করলে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে আপনিও চাইলে হতে পারেন বাংলাদেশ সরকারের একজন প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা। তাই বেশি বেশি পড়াশোনায় জোর দিন যাতে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো পরীক্ষায় কনফিউজড না হন।

একটা কথা আপনাকে মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে কেউ আপনাকে সুযোগ তৈরি করে দেবে না , আপনার নিজেকেই নিজের জন্য সুযোগ তৈরি করে নিতে হবে। সেটা অবশ্য নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে অর্জন করতে হবে।

আশা করি বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করার উপায় সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। আশা করি উপরের কৌশল ও টিপসগুলো অনুসরণ করলে যেকেউ বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button